ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, সিরিয়া অভিযানে রুশ বিমান বাহিনী তুরস্কের আকাশসীমার কাছ দিয়ে যুদ্ধবিমান উড়িয়েই যাবে।
জঙ্গিদের আস্তানা সাধারণত ওই এলাকাগুলোতে হওয়ায় রাশিয়া তুরস্ক সীমান্তের কাছ দিয়ে বিমান অভিযান চালাতে বাধ্য এবং তা নিঃসন্দেহেই চলবে বলেও জানান তিনি।
রাশিয়া বাহিনী বুধবার সিরিয়ার লাতাকিয়া প্রদেশের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে প্রচণ্ড বোমা হামলা চালিয়েছে। এ এলাকার কাছেই মঙ্গলবার রুশ জঙ্গিবিমান এসইউ-২৪ ভূপাতিত করে তুরস্ক। বিমানটি তুরস্কের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ আঙ্কারার।
তবে রাশিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং তুরস্কের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে। বুধবার ওই অঞ্চলে জঙ্গিবিমানগুলোর অভিযান নিরাপদ করতে রাশিয়া সিরিয়ার লাতাকিয়ার বিমানঘাঁটিতে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মধ্য দিয়ে রাশিয়া তাদের আর কোনো বিমান ভূপাতিত না করার ব্যাপারে তুরস্ককে কড়া সতর্কবার্তা দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে একই সঙ্গে সংযত আচরণও প্রকাশ করছে রাশিয়া। তুরস্কও সংযত রয়েছে। দুই দেশই বলেছে, একে অপরের সঙ্গে লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে সহায়তা করতে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে বিমান হামলা শুরু করে রাশিয়া।
গত কয়েক সপ্তাহে তুরস্ক কয়েকবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তে তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তায়েপ এরদোয়ান বলেন, অতীতে আরো খারাপ ঘটনা ঘটতে পারত। শুধুমাত্র তুরস্ক 'মাথা ঠান্ডা' রেখেছিল বলে তা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
মঙ্গলবারের ঘটনার পর উভয় দেশ একে অপরের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভের তুরস্ক সফরে যাওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়।
এ ঘটনার পর রুশদের তুরস্ক ভ্রমণে না যাওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত সুপারিশ অনুমোদন করেন তিনি।
বুধবার টেলিভিশনে পুতিন বলেন, "আমাদের বিমান ধ্বংস করা এবং আমাদের বৈমানিকের মৃত্যুর মত দুঃখজনক ঘটনার পর এ পদক্ষেপ নেওয়া অপরিহার্য।"
রাশিয়ার জনগণের কাছে তুরস্ক ছুটি কাটানোর সবচেয়ে পছন্দের জায়গা ছিল।
রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ট্যুর অপারেটর নাতালি ট্যুরস তাদের তুরস্ক ভ্রমণের আয়োজন আপাতত বন্ধ রেখেছে।