যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের এই মুখপাত্র বলেন, বিচারে সুষ্ঠুতা নিয়ে সন্দেহ দেখা দেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে আমরা সতর্ক করছি যে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে না মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা। এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কর্মীরাও মৃত্যুদণ্ড স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এদিকে, সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকরের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর থেকে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসির ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা এ ধরণের দুর্ভাগ্যজনক হত্যাকাণ্ডে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও চরমভাবে বিরক্ত। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ১৯৭৪-এর ৯ এপ্রিল পাকিস্তান-ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল, তার ভিত্তিতে বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত বিষয় মিটমাট হয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এটি সুনাম ও একতাকে ত্বরান্বিত করবে। বাংলাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে ওই বিবৃতির জবাবে পাকিস্তানকে তিরস্কার করে। দেশটির হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। একইসঙ্গে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানকে মন্তব্য না করতে বলা হয়। কারণ হিসেবে পররাষ্টমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী পাকিস্তান হাইকমিশনার সুজা আলমকে বলেন, ঘটনাটি দৃষ্টিকটু এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত। কেননা যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
বাংলাদেশের বেশিরভাগ জনগণেরই এই বিষয়ে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন এবং সহযোগিতা রয়েছে। যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড শনিবার দিবাগত রাতে কার্যকরের খবর বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই প্রচার করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংসাদমাধ্যম। তবে ওইসব সংবাদে সাকা-মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধ সংক্রান্ত তথ্য উপেক্ষিত হয়ে ‘বিরোধীদলীয় নেতা’ পরিচয়টাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। রায় কার্যকর হওয়ার পরপরই যুক্তরাজ্যের বিবিসি, রয়টার্স, যুক্তরাষ্ট্রের এপি, ইয়াহু নিউজ, ফ্রান্সের এএফপি, কাতারের আল-জাজিরা, ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভির মতো সংবাদমাধ্যমগুলো খবরটি প্রচার করে।যেখানে প্রায় সব গণমাধ্যমই একাত্তরের শীর্ষ এই দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে ‘যুদ্ধাপরাধ’ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের পরিবর্তে রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশেই বেশি তৎপর থাকে।