স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাকে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে বিদায় (ভিডিও সহ)।

    mokkkkkস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনুষ্ঠান থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক ওয়ালী উল্যাহকে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে বের করে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ নেতা, সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়ালী উল্যাহ’র এ ঘটনার একটি ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা চলছে।  গত ১২ নভেম্বর দুপুরে নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। সেদিন উপজেলার ‘দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) পরিচালিত একটি কমিউনিটি রেডিওর উদ্বোধন অনুষ্ঠান ছিল।  এতদিন ঘটনাটি চাপা থাকলেও সম্প্রতি ভিডিওচিত্রটি মোবাইল ফোন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়ে পড়ায় আলোচনার ঝড় ওঠে। এদিন অপ্রীতিকর ওই ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচার দাবিতে হাতিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জেলা পুলিশ সুপার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান মন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রমতে, গত ১২ নভেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা পরিচালিত কমিউনিটি রেডিও ‘সাগর দ্বীপে’র উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এ উপলক্ষে হাতিয়া প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় এক সুধী সমাবেশের। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। সূত্রমতে, দ্বীপ উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন হাতিয়া পৌর মেয়র এ কে এম ইউসুফ আলী।
    অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌস, তার স্বামী মোহাম্মদ আলী, হাতিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ওয়ালী উল্যাহ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঞ্চে আসার কিছুক্ষণ আগেই সেখানে উপস্থিত হন অধ্যাপক ওয়ালী উল্যাহ। মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই দুইজন লোক তাকে টেনে হেঁচড়ে মঞ্চ থেকে নিচে নামিয়ে আনেন। এরপর ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন, ওয়ালী উল্যাহকে মঞ্চ থেকে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে বের করে দেওয়ার ঘটনায় জড়িত ছিলেন স্থানীয় এমপি আয়েশা ফেরদৌসের স্বামীর পিএস ও বাবুর্চি। ঘটনার সময় মঞ্চে আগত লোকজন তাদের মোবাইল ফোনে মুক্তিযোদ্ধাকে অপমানের দৃশ্যটি ধরণ করেন। পরে ঘটনার প্রতিবাদ জানায় হাতিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারা তাৎক্ষণিক মিছিলসহ সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন। বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানতে পেরে দায়িত্বে অবহেলার কারণে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন।  বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঘটনার শিকার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার অধ্যাপক মো. ওয়ালী উল্যাহ সাংবাদিদের বলেন, ‘আসলে যারা আজ আমাকে অপমান করেছে তারা তো করবেই! কারণ তারা তো মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের কেউ নয়।’ অভিযোগ সম্পর্কে জানতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আয়েশা ফেরদৌসের স্বামীর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। 


    *

    Post a Comment (0)
    Previous Post Next Post