বুধবার ষষ্ঠ দিনের শুনানি নিয়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বেঞ্চ আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের এ দিন ঠিক করে দেয়।
বেঞ্চের অপর তিন সদস্য হলেন-বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
আদালত বলেছে, ৩০ নভেম্বর, ১ ও ২ ডিসেম্বর আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ পাবে। রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তি দেবে ৭ ডিসেম্বর। আসামিপক্ষ এর উত্তর দেবে ৮ ডিসেম্বর।
এর আগে বুধবার ষষ্ঠ দিনের শুনানিতে আসামিপক্ষ পেপারবুক থেকে সাক্ষীদের জবানবন্দি উপস্থাপন শেষ করে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা ষষ্ঠ মামলা এটি, যার ওপর শুনানি চলছে।
গত ১৯ নভেম্বর একই বেঞ্চে এ মামলার তৃতীয় দিনের শুনানি হয়। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে শুরু হয় ষষ্ঠ দিনের শুনানি। মাঝে আধঘণ্টা বিরতি দিয়ে সকাল সোয়া ৯টা থেকে সোয়া একটা পর্যন্ত শুনানি চলে।
এদিন নিজামীর পক্ষে তার আইনজীবী এস এম শাজাহান পেপারবুক থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তার বক্তব্য ও আসামিপক্ষের চার সাক্ষীর বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিশির মনির।
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির।
বুদ্ধিজীবী গণহত্যা, হত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন, সম্পত্তি ধ্বংস, দেশত্যাগে বাধ্য করা, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় গত ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল।
জামায়াতে ইসলামীর আমির নিজামী একাত্তরে ছিলেন দলটির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের নাজিমে আলা বা সভাপতি এবং সেই সূত্রে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত আল বদর বাহিনীর প্রধান।
স্বাধীনতাকামী বাঙলির ওপর দমন-পীড়ন চালাতে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য গঠিত রাজাকার বাহিনী ও শান্তি কমিটিতেও তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে ট্রাইব্যুনালের রায়ে উঠে আসে।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ২৩ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন নিজামী। ছয় হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার নথিপত্রসহ নিজামীর করা আপিলে ১৬৮টি যুক্তি তুলে ধরে সাজার আদেশ বাতিল করে খালাস চাওয়া হয়। সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেনি রাষ্ট্রপক্ষ।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সুপ্রিম কোর্টে অবকাশের আগেই এ শুনানি শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।